
নেত্রকোনার মদনে নিজাম উদ্দিন নামের এক সাংবাদিককে হাত-পা কেটে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন সেলিম মিয়া নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম মিয়া মোবাইলফোনে ওই সাংবাদিককে এমন হুমকি দেন।
হুমকির কল রেকর্ডটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কল রেকর্ডে সেলিম মিয়াকে বলতে শোনা যায়, হাত-পা কেটে ফেলব, এলাকায় থাকতে পারবি না। এছাড়াও এতে আরও নানারকম হুমকি ধমকি দিতে শোনা যায়।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী নিজাম উদ্দিন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওইদিন রাতেই মদন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
নিজাম তালুকদার দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার মদন উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তিনি মদন উপজেলা প্রেসক্লাবের প্রচার ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক। তিনি মদন উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীরপুর সেন্টার এলাকায় বসবাস করেন।
আর অভিযুক্ত সেলিম মিয়া উপজেলার চানগাঁও গ্রামের মড়লপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে তিনি চানগাঁও ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
সাধারণ ডায়েরি ও ভুক্তভোগী সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মদনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে গত ২৩ মে মেহেদি হাসান ওরফে নবাব নামের কলেজ পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী থানায় মামলা করেন। এতে নেত্রকোনা-৪ (মোহনগঞ্জ-মদন-খালিয়াজুরি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানসহ ৬৮ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যা মিয়াকেও আসামি করা হয়। বিদ্যা মিয়ার এক ছেলে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। এ নিয়ে সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন সংবাদ প্রকাশ করেন।
সাংবাদিক নিজামের দাবি, সংবাদের জেরে বিদ্যা মিয়ার আত্মীয় সেলিম মিয়া এতে ক্ষিপ্ত হন। গত সোমবার দুপুরে তিনি নিজাম উদ্দিনকে মোবাইলফোনে হাত-পা কেটে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেন। পাশাপাশি বেশি বাড়াবাড়ি না করার জন্য সতর্ক করেন।
নিজাম উদ্দিন আরও বলেন, হুমকি দেওয়া কল রেকর্ড সংযুক্ত করে আমি গত সোমবার রাতে থানায় জিডি করেছি। বর্তমানে আমি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত সেলিম মিয়া বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বলেন, সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আমার আত্মীয় হন। ছোট ভাই হিসেবে অধিকার নিয়েই এসব বলেছি। তবে ওই দিন আমি অবশ্যই রেগে গিয়ে তাকে বকাঝকা করেছি এটা সত্য। প্রথমে সে (নিজাম) আমাকে ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছে, পরে জবাবে আমি তাকে এসব বলেছি। যদিও কল রেকর্ডের শুরুর দিকের কথাবার্তাগুলো নেই।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুল আল শাহ বলেন, জিডির বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।