কেন্দুয়া প্রতিনিধি : নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় এক গর্ভবতী নারীকে মিথ্যা চুরির অপবাদে মারপিট করে তার গর্ভপাত ঘটানো ও জেল খাটানোর ঘটনায় বিজ্ঞ আমলী আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট)গন্ডা ইউনিয়নের গাড়াদিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মোঃ শহিদুল (৪৫) মিয়া বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। যার সি,আর মোঃ নং ২০১ (১) ২০২৫। অভিযুক্তরা হলেন, প্রতিবেশী সুমা আক্তার (২৮), বদরুল আমিন (২৫)। স্বাক্ষী করা হয়েছে ৫জনকে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আসামীগণের সহিত বাদী পক্ষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত্রুতা চলে আসছিলো। আসামীগণের বাড়ীতে তাদের ভাগিনা জিহাদ হাসান চুরি করার পরে পূর্ব পরিকল্পিত মতে শহিদুলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে গত ৬জুন বিকালে গর্ভবতী জানা স্বত্বেও তাকে তার বাড়ীতে এসে ধরে ফেলে। এরপর ভুক্তভোগীকে মাটিতে ফেলে দিয়ে তলপেটে স্বজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে তারা। ফলে তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গ দিয়া সামান্য রক্তপাত শুরু হয়।
পরে তার ডাক চিৎকারে তার স্বামী শহীদুলসহ লোকজন ঘটনাস্থলে ফিরাইতে গেলে তাদেরকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে তারা তাদের ক্ষমতাবলে পুলিশ এনে তার স্ত্রীকে মিথ্যা চুরির দায়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। অতঃপর তার স্ত্রী জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও সামান্য রক্তক্ষরণ হতে থাকে। গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় তার স্ত্রী বাড়ীতে ঘরে থাকাবস্থায় আবারও আসামীগণ ঘটনাস্থলে জাবরাইয়া ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে তলপেটেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্বজোরে কিল, ঘুশি ও লাথি মারে। মারপিটের কারণে পুনরায় তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গ দিয়া রক্তক্ষরণ শুরু হলে সাক্ষীগণের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় গর্ভপাত হয়। এমতাবস্থায় আসামীগণের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টের আদেশ দানে সুবিচার কামনা করেন বিজ্ঞ আদালতের কাছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪জুন দিবাগত রাতে বিদেশ ফেরত আলামিনের ঘরে চুরি হলে তার ভাগিনা জিহাদ হাসান ও শহীদুলের স্ত্রীকে পুলিশ গত ১১জুন গ্রেফতার করে ও জেল হাজতে প্রেরণ করে। কথা হয় শহীদুল, তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার, আলামিনের মা হালিমা আক্তার ও স্থানীয়দের সাথে।
মোঃ শহিদুল মিয়া বলেন, মিথ্যা চুরির অভিযোগে আমার স্ত্রী জেল খেটেছে। ওদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়ে তার গর্ভপাত হয়েছে। মেডিকেল কাগজপত্রও রয়েছে।
তিনি আরো বলেন,বদরুল আমিনদের সাথে আমাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে এমনটা হতে পারে।
সেলিনা আক্তার বলেন, জিহাদ হাসান এর আগেও চুরি করেছে অনেকেই জানে। পাড়া প্রতিবেশী হিসেবে একজনের বাড়িতে অন্যজনের যাওয়া আসা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল কাটিয়েছে ওরা। তিনি আরো বলেন, তাদের মারপিটে আমার পেটের বাচ্চাটা পর্যন্ত মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।
আলামিনের মা হালিমা আক্তার বলেন, চুরির সাথে জড়িত থাকার কারণে পুলিশ তাকে নিয়ে যায়। এতে আমাদের হাত নেই। আর শহীদুলের স্ত্রীকে কেউ মারপিট করেনি। কেনো তাকে মারতে যাবো।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার এসআই ও উক্ত অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।