নেত্রকোনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐহিত্যবাহী কুস্তি-খেলা

7

দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া কুস্তি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের পেড়ারগাতী বটতলা গ্রামে। খেলা দেখতে মানুষের মেলা জমেছিলো মাঠে। শনিবার বিকাল তিনটা থেকে শুরু হয় কুস্তি প্রতিযোগিতা।

এতে সদর উপেজলার কাইলাটি ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রাম, সিদলাউড়, পেড়ারগাতী, স্বল্পইকান্দি, অরঙ্গবাদ ও বটতলা গ্রামের কুস্তিগিররা অংশ নেন। এছাড়াও জেলার সদরের বিভিণœ গ্রামের মানুষ খেলা দেখতে ভিড় জমায়।
আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহি কুস্তি খেলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পেড়ারগাতী গ্রামের কৃষক মো. এরশাদ মিয়া, বটতলা গ্রামের শিক্ষক জিয়াউর রহমান ও সিদলাউড় গ্রামের ওয়াসিম মিয়া এই খেলার আয়োজন করেন। মোট ছয়টি গ্রামের ১৫ থেকে ২০ জনকে নিয়ে তারা একটি আয়োজক কমিটি গঠন করেন। পরে শুক্রবার উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেন তারা। এরপর শনিবার দুপুর থেকে খেলার মাঠে ভিড় জমতে শুরু করে। বিকালে ছোট বড় ১০০ জন খেলোয়াড়ের অংশ গ্রহণে এই খেলা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। খেলায় কাইলাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। ধীরে ধীর খেলা জমতে শুরু করলে হাজারো মানুষের ভিড় জমে যায় মাঠে। চারপাশে উপস্থিত দর্শকদের মাঝে বিভিন্ন বয়সের পুরুষদের দেখা যায়। পাশাপাশি গ্রামের নারীরাও দূর থেকে কুস্তি প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। খেলাকে কেন্দ্র করে মাঠে মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে কুস্তিগিররাও আসেন খেলা দেখতে। তবে দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে গ্রামের মানুষদের মাঝে এক উৎসব পরিলক্ষিত হয়। বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের মাঝে শিশু কিশোরদেরকেই বেশি দেখা গেছে।
খেলা শেষে উলুয়াটি গ্রামের নতুন প্রজন্মের কুস্তিগির শাহ আলমের হাতে একটি এল ইডি টেলিভিশন তুলে দেয়া হয়। খাসি পেয়েছেন রবি মিয়া, আলম মিয়া। এছাড়াও ছাতা মোবাইল পুরস্কার জিতে নেন কুস্তিগিররা।
দীর্ঘদিন পর প্রিয় খেলার খবর পেয়ে আশপাশ ও জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ ছুটে আসেন খেলা দেখতে। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি খেলা এবং খেলার স্টাইল দেখতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন কুস্তিগিররাও।

রাজুরবাজার এলাকার কুস্তিগির মো. শামীম জানান, এটি একটি শক্তির খেলা। শরীর মন দুটোই ভালো রাখে। আমার বাপ দাদাদের কাছ থেকে আমি শিখেছিলাম। কিন্তু এখন এসে দেখছি নতুন খেলোয়াড়দের মাঝে সাহস নেই। দেখেও মনে হয়না শক্তি রয়েছে। এই খেলারও অনেক কায়দা আছে। আজকাল ছেলোরা পারেনা। তারপরও এই আয়োজন দেখে ভালো লাগছে। আবারো ফিরবে ঐহিত্যের খেলা।
আয়োজক কমিটির সদস্য মো. রফিক মিয়া জানান, নতুন প্রজন্মের ছেলেরা এখন জানেইনা যে বর্ষাকালে এটি একটি দুর্দান্ত খেলা ছিলো।

এই খেলার জন্য শরীর সুস্থ রাখতে হয়। এতে মানসিকভাওে ছেলেরা সুস্থ থাকে। তাই আমরা এটিকে পুনরায় শুরু করেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here