নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় জোবেদা খাতুন (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জোবেদা পরপর তিনবার স্ট্রোক করার পর প্যারালাইজড হয়ে যান। তেমন একটা হাঁটতে চলতে পারতেন না। দুই লাঠিতে ভর করে ধীরে ধীরে চলাফেরা করতেন।
তার মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন প্রতিবেশীরা।
সোমবার (৩০ জুন) সকালে পৌরশহরের টেংগাপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির পুকুর পাড়ের একটি আম গাছ থেকে জোবেদার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জোবেদা খাতুন মোহনগঞ্জ পৌরশহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের টেংগাপাড়া এলাকার মৃত মো. মিছিল মিয়ার স্ত্রী।
জোবেদা খাতুনের দুই সংসারে দুই ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে।
ছেলের বউদের সাথে তার বনিবনা হচ্ছিল না। থাকতেন মেয়েদের বাসায়।
প্রতিবেশীরা জানায়, ছেলের বউদের সঙ্গে জোবেদা আক্তারের বনিবনা হচ্ছিল না। ফলে পাশেই মেয়েদের বাসায় থাকতেন তিনি। ভোর পাঁচটার দিকে মেয়ের বাসা থেকে নিজের বাড়িতে আসেন জোবেদা। পরে ছয়টার দিকে ছোট ছেলের বাসার পাশের পুকুর পাড়ে একটি আম গাছে দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত জোবেদার লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে জোবেদার শরীরের কাপড়চোপড় ও মাথার চুল ভেজা ছিল। এতে সবার সন্দেহ দানা বাধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানান, জোবেদা স্ট্রোকে প্যারালাইজড ছিলেন। দুই লাঠিতে ভর দিয়ে সামান্য একটু সোজা হয়ে এক পা দু-পা হাঁটতেন। তিনি কীভাবে এত উঁচু গাছে ফাঁস লাগাবেন। আর তার কাপড়চোপড় ও মাথার চুলও ভেজা ছিল। তাদের ধারণা- তাকে কেউ পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জোবেদার দুই ছেলে পাওয়া যায়নি। তবে মেয়েরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় দুই সংসারের ছেলে-মিয়ে ঝগড়া শুরু করে৷ তাদের কেউ কেউ এটাকে রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন। পরে অবশ্য তারা সবাই মিলে এসেছিল ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে যেতে। কিন্তু দেওয়া হয়নি৷ মৃত্যু ঘিরে যেহেতু রহস্য তৈরি হয়েছে, তাই কারণ জানতে ময়নাতদন্তের লাশ জন্য লাশ নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।