ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১ ১৪৩১

২০ কার্গো এলএনজি আমদানি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

২০ কার্গো এলএনজি আমদানি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

২০ কার্গো এলএনজি আমদানি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

জ্বালানি নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে স্পট মার্কেট থেকে ২০ কার্গো এলএনজি আমদানি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আমদানিকৃত গ্যাস দিয়ে জরুরি চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই দেশে গ্যাসের তীব্র সংকট রয়েছে। বিশেষ করে শিল্পকারখানায় পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। একইভাবে বাসাবাড়িতে রান্নায়ও পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায়  পেট্রোবাংলার সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী ২৩টি তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে ৪ মাসের জন্য ২০ কার্গো এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকে ২০ কার্গো এলএনজি আমদানির বিষয়ে নীতিগত অনুমোদনের একটি প্রস্তাব আজ বুধবার অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এবং কমিটির সভাপতি সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে আজকের সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রস্তাবটি উপস্থাপন করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

এ ছাড়া সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি, সার ও  বিদ্যুৎ খাত নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য উৎপাদিত দেশীয় গ্যাসসহ আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত (সেপ্টেম্বর মাসে ৬ কার্গো, অক্টোবর মাসে ৫ কার্গো, নভেম্বর মাসে ৫ কার্গো এবং ডিসেম্বর মাসে ৪ কার্গো) মোট ২০ কার্গো এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে পেট্রোবাংলার।জানা গেছে, বিদ্যুৎ, সার, শিল্পখাতসহ বিভিন্ন খাতে দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩৮০০ এমএমসিএফ (কম/বেশি)। দেশে গ্যাস সরবরাহের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দৈনিক ৩১৫০ এমএমসিএফ যা চাহিদার ৮২ শতাংশ। মোট সরবরাহকৃত গ্যাসের মাধ্য দেশীয় উৎপাদন দৈনিক ২০৫০ এমএমসিএফ এবং অবশিষ্ট দৈনিক প্রায় ১১০০ এমএমসিএফ গ্যাস এলএনজি আকারে আমদানি করা হয়।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে এক্সেলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক দৈনিক ৬০০ এমএমসিএফ এবং সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক দৈনিক ৫০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। সরকার টু সরকার বা জি টু জি ভিত্তিতে পেট্রোবাংলার সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় কাতারের রাস লাফ্ফান লিকুইডিফাইড নেচারাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (কাতারগাস) থেকে ১৫ বছর মেয়াদে বর্তমানে ২.৫ এমটিপিএ এলএনজি এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল (ওকিউটি) থেকে ১০ বছর মেয়াদে বর্তমানে ১.০ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া গ্যাসের চাহিদার ভিত্তিতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা হয়। এর আগে সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র এবং সুইজারল্যান্ড ও কাতারের স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি গ্যাস আমদানি করা হয়েছে। 
সূত্রমতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ এর আওতায় প্রক্রিয়াকরণের জন্য সরকার গত ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর তারিখে নীতিগত অনুমোদন দেয়। এই  আইনের আওতায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে সরবরাহকারীর তালিকা প্রস্তুতের জন্য এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করে গত ২০১৭ সালের ৮ জুন  তারিখে জাতীয় পত্রিকায়, সিপিটিইউ, পেট্রোবাংলা ও আরপিজিসিএল-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সাধারণত গ্যাসের চাহিদা নিরূপণ করে স্পট মার্কেট থেকে নির্দিষ্ট মেয়াদে এলএনজি আমদানির জন্য মন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন নেওয়া হয়। জরুরি প্রয়োজন মেটাতেই চার মাসের চাহিদা পূরণে স্পট মার্কেট থেকে ২০ কার্গো এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করা কিছুটা সময় সাপেক্ষ। এ কারণে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতার আমদানির বিকল্প হিসেবে স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি আমদানি করা হয়ে থাকে।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়