হাতে প্লাস্টার থাকলে ওজুর বিধান কী?
নিউজ ডেস্ক
হাতে প্লাস্টার থাকলে ওজুর বিধান কী?
পবিত্র কোরআনুল কারিমে নামাজ পড়ার আগে ওজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে শারীরিক পবিত্রতা লাভের জন্য গোসলের পরে ওজুর স্থান।
ওজুর ফরজ ৪টি। পুরো চেহারা ধোয়া, উভয় হাত কুনুইসহ ধোয়া, মাথা মাসাহ করা এবং উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া। আর ওজুর এ ৪টি ফরজের কথা পবিত্র কোরআনুল কারিমে এসেছে।
রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ۚ وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا ۚ وَإِن كُنتُم مَّرْضَىٰ أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ ۚ مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَـٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
অর্থ: ‘হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও তখন তোমাদের মুখ হাত কনুই পর্যন্ত ধোবে ও তোমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে নেবে, আর গিট পর্যন্ত ধোবে। যদি তোমরা অপবিত্র থাকো তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। যদি তোমরা অসুস্থ থাকো বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে। আসো কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে সংগত হও, আর পানি না পাও, তবে তাইয়াম্মুম করবে। পরিষ্কার মাটি দিয়ে এবং তা মুখে ও হাতে বুলিয়ে নেবে। আল্লাহ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের ওপর তার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জানাতে পারো’। (সূরা: মায়িদা, আয়াত: ৬, কোরানশরিফ: সরল বঙ্গানুবাদ, অনুবাদ: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন)
ভেঙে যাওয়ার কারণে কারো হাতে যদি প্লাস্টার করতে হয় এবং কুনুই পর্যন্ত হাতের কোনো অংশ প্লাস্টারের নিচে ঢাকা পড়ে, তাহলে তিনি ওজু করার সময় ওজুর অন্যান্য অঙ্গ স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই ধুবেন আর প্লাস্টার করা হাত মাসাহ করে নেবেন।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, مَنْ كَانَ بِهِ جُرْحٌ مَعْصُوبٌ فَخَشِيَ عَلَيْهِ الْعَنَتَ، فَلْيَمْسَحْ مَا حَوْلَهُ، وَلاَ يَغْسِلْهُ
অর্থ: কারো ক্ষতস্থান ব্যান্ডেজ করা হলে এবং তার ধৌত করলে ক্ষতি হওয়ার অশংকা হলে সে ঐ জায়গাটি না ধুয়ে মাসাহ করে নেবে। (মুসান্নাফে ইবেন আবি শাইবা: ১৪৫৮)
ক্ষতস্থানে লাগানো প্লাস্টার বা যেকোনো ধরনের ব্যান্ডেজ ওজুর জন্য খোলা যদি সহজ না হয় বা খুলে ধৌত করলে ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়ার আশংকা থাকে, তাহলে ওজু বা ফরজ গোসলের সময় ব্যান্ডেজ বাঁধা জায়গা ধোয়ার পরিবর্তে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করা জায়েজ হবে।
প্লাস্টার বা যেকোনো ধরনের ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার জন্য পবিত্র অবস্থায় প্লাস্টার লাগানো জরুরি নয়। তাই প্লাস্টার লাগানোর সময় যদি কারো ওজু না থাকে বা গোসল ফরজ থাকে, তাহলেও পরবর্তীতে ওজু-গোসলের সময় প্লাস্টারের ওপর মাসাহ করা যায়।
যেকোনো ধরনের ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার পর তা পরিবর্তন করলে অর্থাৎ যে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করা হয়েছে তা খুলে নতুন ব্যান্ডেজ লাগালে ওজু বা মাসাহ ভঙ্গ হয় না। নতুন ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করে নেওয়া উত্তম, জরুরি নয়। তবে যদি ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ব্যান্ডেজ খোলা হয়, ঐ জায়গা ধৌত করা যদি ক্ষতিকর না থাকে, তাহলে ব্যান্ডেজ খোলার পর আগের মাসাহ বাতিল হয়ে যাবে। ওজু বহাল রাখতে হলে মাসাহকৃত জায়গা ধুয়ে নিতে হবে।
- রাগ নিয়ন্ত্রণে ৪ আমল
- হাউজে কাউসারে প্রিয়নবী সা.-এর সঙ্গী হবেন যিনি
- বন্যার্তদের অগ্রিম জাকাত দেওয়া যাবে কি?
- হজরত আদম ও মুসা আ.-এর মধ্যে যে কথোপকথন হয়েছিল
- বন্যার পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে কী?
- বন্যার্তদের সাহায্য করা বড় সওয়াবের কাজ
- নামাজে দৃষ্টি কখন কোথায় রাখতে হবে?
- আমানতের খেয়ানত মারাত্মক অপরাধ
- সুলাইমান আ.-কে যে বিস্ময়কর রাজত্ব দিয়েছিলেন আল্লাহ
- ইসলামে তারুণ্যের অগ্রাধিকার