ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৪ ১৪৩১

বিদেশি সহায়তার আশা কম, অভ্যন্তরীণ রাজস্বে গুরুত্ব : অর্থ উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

দাতা সংস্থার ঋণের ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পরমুখাপেক্ষী হওয়ার বিপদ সরকার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। বিদেশি সহায়তা খুব একটা পাওয়া যাবে না জানিয়ে আয়কর কর্মকর্তাদের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ওপর জোর দেন উপদেষ্টা।গতকাল শনিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে অয়োজিত ‘অর্থ আইন, ২০২৪-এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে আনীত পরিবর্তন’-এর ওপর আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।ঋণগ্রস্ত হলে দাতা সংস্থার চাপিয়ে দেওয়া শর্ত অনুযায়ী চলতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটা কথা আছে—আপনার হাতটা যদি আমার পকেটে থাকে, আমি ডান দিকে গেলে আপনিও যাবেন। আমি বাঁয়ে গেলে আপনিও বাঁয়ে যাবেন। সেটা কিন্তু হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি। দাতা সংস্থা যেদিকে যেতে বলে; অবশ্য আমরা চেষ্টা করছি নিজেদের সুবিধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে।ডান দিকে যেতে বললে আমার যাওয়ার কথা বাঁ দিকে, বাঁ দিকে গেলে আমার যাওয়ার কথা ডান দিকে। সেটা অনেক সময় সম্ভব হয় না।’ঋণের বোঝা বাড়ছে, তাই নিজেদের অর্থসংস্থানের চেষ্টা করতে হলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমাব না। আমাদের ঘাটতি বাজেট থাকে।

বড় অংশ বাইরে থেকে ঋণ হিসেবে আনতে হয়। দিন দিন ঋণের বোঝা বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করব নিজেরা নিজেদের অর্থসংস্থান করতে। তবে এটা ঠিক যে নিজেদের অর্থে হবে না, বাইরে থেকেও অর্থ আনতে হবে। তবে লক্ষ করতে হবে আমরা যেন পরমুখাপেক্ষী না হই।

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদেশি সহায়তা খুব একটা পাওয়া যাবে না। অভ্যন্তরীণ রাজস্বের ওপর নির্ভর করতে হবে। তাই রাজস্ব আদায়ে দীর্ঘসূত্রতা কমাতে হবে। প্রত্যক্ষ করে ফাঁকি দেওয়া যায় না। কিন্তু আমাদের পরোক্ষ করে ঝামেলা আছে। কষ্ট দিয়ে কারো কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করবেন না।’

সরকারি অর্থের অপচয় কমানোর আহবান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এই অবস্থায় সরকারের অর্থের প্রয়োজন। সরকারি খরচ ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে অর্থ প্রয়োজন। সরকার যেন কোনো অর্থের অপচয় না করে। প্রকল্পগুলো মাঠের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয় না। এতে অর্থের অপচয় হয়। এই তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, যেটা দরকার, সেটার ভিত্তিতে যেন প্রকল্প আসে।

আলোচনায় এনবিআরের আইনগুলোকে ব্যবসাবান্ধব করার ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, সবাইকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের অনুরোধ করছি। জনগণের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপছে, অথচ এনবিআর কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। এখান থেকে বের হতে হবে। করদাতারা তাঁদের প্রদেয় করের অপচয় দেখতে চান না।

তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর বড় অঙ্কের টাকা আমরা করছাড় দিই। প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকার করছাড় দিই। এটার বড় অংশ করে ঠিক করলে কর আদায় বাড়বে। আমরা সঠিকভাবে কর আইন প্রয়োগ করতে চাই।’

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. লুত্ফুল আজীম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে আয়করের সংস্কার প্রয়োজন। প্রত্যক্ষ করকে একটা জায়গায় নিতে সংস্কার লাগবে। আমরা অটোমেশন চাই। কোনো অফিসারের এর বিরোধিতার সুযোগ নেই। অটোমেশনের বিকল্পও নেই।’

এ সময় লুত্ফুল আজীম অটোমেশনের পাশাপাশি কর কর্মকর্তাদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণেও জোর দিয়ে বলেন, এখানে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করলে পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হবে।

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়