ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১ ১৪৩১

নরওয়েতে ‘রুশ গুপ্তচর’ তিমির রহস্যজনক মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

নরওয়েতে ‘রুশ গুপ্তচর’ তিমির রহস্যজনক মৃত্যু

নরওয়েতে ‘রুশ গুপ্তচর’ তিমির রহস্যজনক মৃত্যু

নরওয়ের সমুদ্র সৈকতে ১৪ ফুট লম্বা ও ২ হজার ৭০০ ফাউন্ডের একটি বিশাল তিমির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, রাশিয়ার নৌবাহিনী সম্ভবত প্রশিক্ষণ দিয়ে এই তিমিটিকে ‘গুপ্তচর’ হিসেবে ব্যবহার করেছিল।

জানা গেছে, ভলদিমির নামে এই প্রাণিটির মৃতদেহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রিসাভিকায় ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। কিন্তু তার মৃত্যু ঘিরে রহস্যের জাল এখনো উন্মোচিত হয়নি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিমিটিকে নিকটস্থ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভলদিমির নামে এই তিমি ১৪ ফুট লম্বা এবং এর ওজন ২ হাজার ৭০০ পাউন্ড। বিশালাকৃতির এই তিমি প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল ২০১৯ সালে। সে সময় এটির সাথে একটি গোপ্রো ক্যামেরা লাগানো ছিল, যেটির গায়ে ‘সেন্ট পিটার্সবার্গের যন্ত্র’ লেখা ছিল। এতেই গুজব ছড়িয়েছিল যে এই স্তন্যপায়ী প্রাণিটি একটি গুপ্তচর তিমি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। যদিও মস্কো কখনো এ ধরনের অভিযোগের কোন জবাব দেয়নি।

মেরিন মাইন্ড নামে একটি সংগঠন সপ্তাহের শেষে ভলদিমিরের নিথর দেহটি আবিষ্কার করে। এ সংগঠনটি বছরের পর বছর ধরে তিমিটির গতিবিধি অনুসরণ করছিল।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্টিয়ান স্ট্রান্ড সংবাদমাধ্যম এএফপিকে তিমিটির মৃত্যুর কারণ অজানা বলে জানিয়েছেন। এমনকি ভলদিমিরের দেহে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

তিনি আরো বলেন, আমরা তার দেহাবশেষ উদ্ধার করতে পেরেছি। তার মৃত্যুর কারণ জানতে ভেটেরিনারি ইন্সটিটিউট যাতে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে পারে সে কারণে তিমিটিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানে রাখা হয়েছে।

ভলদিমিরের আনুমানিক বয়স ১৫ বছর হতে পারে। যদিও একটি বেলুগা তিমির জন্য এটা তেমন কোন বয়স নয়। কারণ এ ধরনের তিমি ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের এপ্রিলে ইনগোয়া দ্বীপের কাছে নরওয়েজিয়ান নৌকাগুলোর কাছাকাছি প্রথম তিমিটিকে দেখা যায়। যা রাশিয়ার উত্তর নৌ বহর মুরমানস্ক থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ ঘটনা সে সময় সকলে নজরে এসেছিল কারণ নর্দার্ন আইল্যান্ডের এতো দক্ষিণে এ ধরনের বেলুগাস তিমি খুব কমই দেখা যায়।

নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থা ওই সময় এ ঘটনা তদন্ত করেছিল। পরে তারা জানিয়েছিল যে, তিমিটি রাশিয়ান সেনাবাহিনীর দ্বারা প্রশিক্ষিত বলে মনে হচ্ছে। কারণ সে মানুষের সঙ্গে মিশতে অভ্যস্ত।

স্থানীয়ভাবে তিমিটিকে ভলদিমির বলে ডাকা হতো। ‘ভল’ একটি নরওয়েজিয়ান শব্দ, মূলত মজা করার জন্য এ নামে ডাকা হতো। একইসঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের নামও যেহেতু ভ্লাদিমির পুতিন তাই মজা করেই তিমিটিকে ওই নামে ডাকা হতো।

সামরিক উদ্দেশ্যে সমুদ্রের স্তন্যপায়ী প্রাণী- যেমন ডলফিনকেও প্রশিক্ষণ দেওয়ার অতীত ইতিহাস রয়েছে রাশিয়ার। দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে কখনোই দাবি করেনি যে ভলদিমিরকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণিদের অতীতে কখনো গুপ্তচর হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এমন কোনো কর্মসূচির অস্তিত্বই রাশিয়া অস্বীকার করেছে।

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়