ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১ ১৪৩১

এস আলম গ্রুপের সম্পদ কেউ কিনবেন না : ড. আহসান এইচ মনসুর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৫৪, ২৯ আগস্ট ২০২৪  

এস আলম গ্রুপের সম্পদ কেউ কিনবেন না : ড. আহসান এইচ মনসুর

এস আলম গ্রুপের সম্পদ কেউ কিনবেন না : ড. আহসান এইচ মনসুর

এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংকের লেনদেন ঋণ স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন প্রতিষ্ঠানটি নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন জমি-সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এগুলো ঠেকাতে আইনি প্রক্রিয়া দরকার। তাই রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এ মুহূর্তে এস আলম গ্রুপের জমি ও সম্পদ না কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এসব কথা বলেন।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাজেয়াপ্ত হওয়ার ভয়ে গোপনে সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে এস আলম গ্রুপ। আইনি জটিলতার কারণে এখনই হস্তক্ষেপ করতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শিগগিরই আইনি উপায় খুঁজে বের করা হবে।তাই সর্বসাধারণকে সাবধান করা হচ্ছে, এস আলম গ্রুপের সম্পদ কেউ কিনবেন না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। এসব সম্পদ জনগণের। এখানে কেউ হাত দেবেন না।আমার জানা মতে এটাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারি। যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সুনিপুণভাবে দুর্নীতি করা হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকে ঘটে যাওয়া কেলেঙ্কারি এবং পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে গভর্নর বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের যে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে বসব। তাদের আমি এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। তারা আমাদের একটি কর্মপরিকল্পনা দেবে।এখন আর বসে থাকার সময় নেই। কাজ করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গেই কাজ করতে হবে। যে বোর্ডটা গঠন করা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ ইনডিপেনডেন্ট বোর্ড। এখানে কোনো মালিক নেই। তাই তাদের সরকারের স্বার্থে, ব্যাংকের স্বার্থে এবং আমানতকারীদের স্বার্থে কাজ করতে হবে।’

গভর্নর বলেন, ঠেকা চালানোর জন্য এরই মধ্যে ছয়টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। শিগরিরই আরো কয়েকটি ব্যাংক পুনর্গঠন করা হবে। তারা রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে এখন ব্যাংক পরিচালনা করবে। যদি তারা ঠিকমতো কাজ না করে, তাহলে  সেখানেও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হবে।

ব্যাংকের মার্জার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই প্রক্রিয়া এখন বাতিল। ভবিষ্যতে ব্যাংকিং কমিশন বা টাস্কফোর্স এসে যে রকম পরামর্শ দেবে, সেভাবে কাজ হবে।

মূল্যস্ফীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু দেশে একটি বড় বন্যা হয়ে গেছে, তাই আগামী দু-তিন মাস মূল্যস্ফীতি নাও কমতে পারে। তবে আমি আশাবাদী, আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে ইনফ্লেশন কমে যাবে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আর এক ডলারও বিক্রি করা হবে না। তবে সরকারি দায় পরিশোধের জন্য মার্কেট থেকে ডলার সংগ্রহ করে আমরা সোনালীসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে দিচ্ছি। যেসব এলসি আগে খোলা হয়েছে, সেসব দায় পরিশোধ, বিদ্যুতের দেনা পরিশোধ এবং সার আমদানির বিষয় গুরুত্ব দিয়ে মার্কেট থেকেই আমরা ডলার ব্যবস্থাপনা করছি। কিন্তু রিজার্ভ থেকে এক ডলারও বিক্রি করার কোনো পরিকল্পনা নেই।’

আমানতকারীদের ধৈর্য ধারণ করার পরামর্শ দিয়ে গভর্নর বলেন, সব আমানতকারী একসঙ্গে টাকা তুলতে গেলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংক টাকা দিতে পারবে না। তাই যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু ছাড়া অতিরিক্ত টাকা ব্যাংক থেকে এখন না ওঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আগের মতো ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সহায়তা দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, সরকার টাকা ছেপে আর কোনো ব্যাংককে অবৈধ সুবিধা দেবে না। ব্যাংকের প্রতি আমানতকারীদের আস্থা ব্যাংকগুলোকেই ফেরাতে হবে।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়