গুমের ঘটনা তদন্ত করতে সারাদেশে যাবে কমিশন

নিউজ ডেস্ক

সবার আগে সব খবর

প্রকাশিত : ১১:৩৭ এএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার

গুমের ঘটনা তদন্ত করতে সারাদেশে যাবে কমিশন

গুমের ঘটনা তদন্ত করতে সারাদেশে যাবে কমিশন

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংস্থা সদস্যদের দ্বারা ‘জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে’ গঠিত তদন্ত কমিশন কাজ শুরু করেছে। গতকাল রবিবার কমিশন প্রথম বৈঠক করেছে। বৈঠকে কমিশনের পাঁচ জন সদস্যের সবাই উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর গুলশানে কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা প্রতিদিনই অফিস করবেন। প্রথম বৈঠকের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।সরকার গত ২৭ আগস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে এই কমিশন গঠন করে। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন—হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন। প্রজ্ঞাপনে এই কমিশনকে তদন্ত শেষ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে ৪৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। কমিশনের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল দেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।

কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, ‘প্রথম বৈঠকে আমরা সবাই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। সেখানে সর্বসম্মতভাবে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথমত, আমরা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব। যে কেউ চাইলে কমিশনে এসে অভিযোগ দিয়ে যেতে পারবেন। এছাড়া কমিশন মনে করলে সারা দেশেই যাবে। আমাদের কাজ মূলত গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার খুঁজে বের করে তাদের সঙ্গে কথা বলা। পাশাপাশি যারা এখনো গুম আছেন তারা কোথায় আছেন? তাদের সঙ্গে কী হয়েছে সেটা খুঁজে বের করা।’ সরকার নির্ধারিত ৪৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে কি না— জানতে চাইলে নূর খান লিটন বলেন, ‘প্রথমত আমরা চেষ্টা করব, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে। যদি না পারি তাহলে সরকারের কাছে আমরা সময় বাড়াতে আবেদন করব। সেটা তো আর এখনই ঠিক করা যাবে না। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।’   

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বার্তায়ও ‘গুম সংস্কৃতির’ সমাপ্তি ঘটানোর অঙ্গীকারের কথা বলা হয়। আয়নাঘর নামে পরিচিতি পাওয়া গোপন বন্দিশালাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবত্কারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। পরদিন ৬ আগস্ট প্রায় আট বছর পর গোপন বন্দিশালা থেকে ছাড়া পান মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও মীর কাসেম আলীর ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম (আরমান)। একই দিনে পাঁচ বছরের বেশি সময় পর গোপন বন্দিশালা থেকে মুক্ত হন পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা।