ত্রাণের কাজে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক

সবার আগে সব খবর

প্রকাশিত : ০২:২৭ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৪ শনিবার

ত্রাণের কাজে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা

ত্রাণের কাজে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা

অদ্ভূত এক পরিবর্তন হয়েছে দেশে বলে মন্তব্য করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেছেন, আমরা উপলব্দী করেছি ত্রাণ কার্যক্রমে মানুষের উচ্ছ্বাস। মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে, এই ত্রাণের কাজে। সেটা সরকারের জন্য মস্তবড় শক্তি। এ কারণে সরকারের জন্য মানুষের কাছে যাওয়া এবং সেবা দেওয়া সহজ হয়েছে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।

ফারুক-ই-আজম বলেন, আমি মাঠ পর্যায়ের বন্যা এবং বন্যোত্তর পরিস্থিতি জানার জন্য সকল কর্মকর্তাদের আহ্বান করেছিলাম। তাদের কাছ থেকে মাঠ পর্যায়ে কি পরিস্থিতি বিরাজ করছে তার বাস্তব চিত্র পেলাম। এটার নিরিখেই আগামী দিনের পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়ে আমরা একটা ধারণা পেলাম। আর এটার ভিত্তিতেই আগামীদিনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে।

পুনর্বাসন কার্যক্রমে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা এবং স্বেচ্ছাসেবকেরাও যোগ দেবেন বলে জানান ফারুক-ই-আজম। তিনি বলেন, কার্যকরভাবে যাতে পুনর্বাসন কার্যক্রম সম্পন্ন হয় সেজন্য তাদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হবে।

পুনর্বাসন কার্যক্রমে জনগণকেও সম্পৃক্ত করা হবে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। বলেন, আগামীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া হবে বস্তুনিষ্ট। আমরা এটাকে সঠিকভাবেই সম্পন্ন করব। পদ্ধতিগতভাবেই হবে। এটার জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে হবে। আর এতে জনগণকে সম্পৃক্ত করা হবে। যাতে মানুষ যেন জানতে পারেন কি হচ্ছে, কেন হচ্ছে এবং কোথায় কোথায় হচ্ছে।

পানি পুরোপুরিভাবে নেমে না যাওয়ায় এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পুরোপুরি নিরূপণ করা যায়নি। সেজন্য শুরুতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হবে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেখানে স্থায়ী টেকসই পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হবে। এখন ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। পানি নেমে গেলে পুনর্বাসনের দিকে যাব আমরা।

জনস্বাস্থ্যের দিকেও সরকার বিশেষ নজর দিচ্ছে বলে জানান ফারুক-ই-আজম। তিনি বলেন, বন্যায় পানিবাহিত নানা রকম রোগ হচ্ছে। সেগুলো আমরা চিহ্নিত করতেছি। অগ্রাধিকারভিত্তিতে একটার পর একটা কাজ শেষ করা হবে।

বন্যা দুর্গত ফেনী-নোয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন ফারুক-ই-আজম। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, আমি দেখেছি পানিবন্দি মানুষ এখনো রয়েছে। সেখানে শুকনো এবং রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকায় দুর্গম হওয়ায় এবং সেখানে নৌকার সংস্কৃতি না থাকার কারণে দূরদূরান্ত থেকে নৌকা, সেনাবাহিনীর বোটসহ বিভিন্ন পরিবহন এনে দূরবর্তী মানুষের কাছে যেতে সময় লেগেছে এটা সত্যি। কিন্তু আন্তরিকভাবে ত্রাণ দেওয়ার আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। এটা আমাদের শক্তি জুগিয়েছে। আমরা দেখেছি অদ্ভূত এক পরিবর্তন হয়েছে দেশে। আমরা উপলব্দী করেছি ত্রাণ কার্যক্রমে মানুষের উচ্ছ্বাস। মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে, এই ত্রাণের কাজে। সেটা সরকারের জন্য মস্তবড় শক্তি। এ কারণে সরকারের জন্য মানুষের কাছে যাওয়া এবং সেবা দেওয়া সহজ হয়েছে।

পানি পুরোপুরি না নামায় মানুষজনকে স্বাভাবিকজীবনে ফিরিয়ে দিতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানান ফারুক-ই-আজম। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে স্বাভাবিকজীবনে ফিরিয়ে আনা হবে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে। অর্থের কোনো অভাব নেই। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছি।