ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৪ ১৪৩১

‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষে লাভবান নেত্রকোণার কৃষক সাইকুল ইসলাম

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২১, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষে লাভবান নেত্রকোণার কৃষক সাইকুল ইসলাম

‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষে লাভবান নেত্রকোণার কৃষক সাইকুল ইসলাম

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় পতিত জমিতে সবুজ ‘লন কার্পেট’ ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন কৃষক সাইকুল ইসলাম (৩৮)। চার বছর ধরে তিনি এই ঘাস চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। ঘাসগুলো দেখলে মনে হয় সত্যিকারের কার্পেট। বাড়ি বা অফিসের আঙিনায়, বাগানে, সৌন্দর্য বাড়াতে দিন দিন এর চাহিদা আর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। উপজেলার সেহড়াউন্দ গ্রামের এই কৃষককে দেখে এখন অনেকেই এমন ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাইকুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চে সাইকুল ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যান। সেখানে তিনি প্রথম লন কার্পেট ঘাস দেখেন। করোনাকাল বলে তখন কাজ পাচ্ছিলেন না। এই ঘাস চাষে তাঁর আগ্রহ জমে। সেখানে তিনি ঘাসের চাষ শেখেন। বাড়ি ফিরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ১২ শতাংশ পতিত জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ঘাস চাষ শুরু করেন। এতে বেশ কিছু টাকা লাভ হয় তাঁর। স্থানীয়ভাবে ঘাসের চাহিদা থাকায় ও অল্প খরচে লাভের মুখ দেখায় তিনি আরও বড় পরিসরে এই ঘাস চাষের উদ্যোগ নেন। এ বছর তিনি ৭০ শতাংশ জমিতে এই ঘাস চাষ করেছেন। পরিচর্যার কাজে যুক্ত আছেন স্থানীয় ১২ জন যুবক। তাঁদের জনপ্রতি দৈনিক দিতে হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বর্তমানে তিনি এই ঘাস প্রতি বর্গফুট বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়। সব খরচ শেষে গত বছর তাঁর প্রায় ছয় লাখ টাকা লাভ হয়েছে বলে জানালেন।

স্থানীয় যুবক সবুজ মিয়া বলেন, এলাকার পতিত জমি ইজারা নিয়ে সাইকুল ঘাস চাষ শুরু করেন। এই ঘাস স্থানীয় শৌখিন মানুষ ছাড়াও দূর থেকে অনেকে এসে কিনে নিয়ে যান। ঘাস চাষে তেমন কষ্ট নেই, খরচও কম। তিনি নিজেও আগামী মাস থেকে বাড়ির সামনে উঁচু জায়গায় ঘাস চাষ করার কথা ভাবছেন। এ ব্যাপারে তিনি সাইকুলের পরামর্শ নিচ্ছেন।

সাইকুলের এখানে ঘাস পরিচর্যার কাজ করেন শ্রমিক আবু রায়হান। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় কেউ এভাবে ঘাস চাষ করেন না। সাইকুল প্রথম এই উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা ১০-১২ জন মজুরিভিত্তিতে এখানে কাজ করি।’

সাইকুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রথম যখন ঘাস চাষ শুরু করেন, তখন এলাকার অনেকেই তাঁকে দেখে হাসিঠাট্টা করছিলেন। এখন অনেকেই এই ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এই ঘাস চাষে এক বছরের মতো সময় লাগে। সব খরচ বাদ দিয়ে গত বছর ছয় লাখ টাকার মতো আয় হয়েছে তাঁর। এ বছর আয় আরও বাড়বে বলে তাঁর ধারণা।

কলমাকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, কলমাকান্দায় এই প্রথম লন কার্পেট ঘাসের চাষ হয়েছে। কৃষক সাইকুল ইসলামের মতো আরও কেউ এই ঘাস চাষ করতে চাইলে কৃষি বিভাগ থেকে তাঁদের সহযোগিতা করা হবে। এই ঘাস সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য শৌখিন মানুষ কিনে থাকেন। এই ঘাস চাষে কম খরচে বেশি লাভ হয়।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়