ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

ভারতীয় ঋণের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চলবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

ভারতীয় ঋণের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চলবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

ভারতীয় ঋণের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চলবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

ভারতের সঙ্গে চলমান কোনো প্রকল্প স্থগিত হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, দেশটির লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় চলমান প্রকল্পগুলো উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিদ্যমান সব বড় প্রকল্পের কাজ চলবে। দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের কথা বিবেচনায় আরো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

ভারত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বড় প্রকল্পে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা সাক্ষাৎ করেন। পরে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিং করেন। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পর এই প্রথম অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের হাইকমিশনার।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারত আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত বিভিন্ন সম্পর্ক রয়েছে। আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত জোরালো।বাংলাদেশ বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র। বিজ্ঞান প্রযুক্তিসহ আরো বড় প্রকল্পে কাজ করতে তারা (ভারত) আগ্রহ দেখিয়েছে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভারতীয় নাগরিক বিভিন্ন প্রকল্পসহ বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশে কাজ করছেন। তাঁদের নিরাপত্তা চেয়েছেন। তাঁদের অনেকে কাজে আছেন।আবার অনেকে ভারতে গেছেন এখনো কাজে ফেরেননি। তবে অতি দ্রুত তাঁরাও আসবেন বলে জানিয়েছেন। 

এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বেশ কিছু বড় প্রকল্পে কাজ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েকটি প্রকল্পের কাজ সাময়িক বন্ধ ছিল। আশুগঞ্জ ও আখাউড়া সড়কের মতো কিছু প্রকল্পের ঠিকাদার ভারতে চলে গেলেও দ্রুতই ফিরে আসবেন ও কাজ শুরু হবে। ভারত থেকে বাংলাদেশের ঋণের অর্থ ছাড় করার বিষয়েও সমস্যা নেই।

বৈঠক শেষে প্রণয় ভার্মা অর্থ উপদেষ্টার মতোই বলেন, এলওসির যে প্রকল্পগুলো বড় সেগুলো বন্ধ হবে না। আগামী দিনে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিতে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে এবং ভারত এ ব্যাপারে ইতিবাচক। তিনি বলেন, আগের মতোই এই অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেবে ভারত। তবে ভিসার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের আগস্টে ভারতের সঙ্গে প্রথম এলওসি চুক্তি হয়। প্রথম চুক্তিতে অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। এর পরে ২০১৬ সালের মার্চে দ্বিতীয় এলওসি চুক্তি হয় ২০০ কোটি ডলার। ২০১৭ সালের মার্চে ভারতের সঙ্গে চুক্তি হয় ৪৫০ কোটি ডলারের।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, বৈঠকে এলওসির তিনটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ক্ষেত্র আছে। এগুলো কিভাবে আরো বাড়ানো যায়, সে বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে। এ বিষয়ে বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ভারত আরো গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য নেবে। 

স্থবির বাণিজ্য বাড়াতে চায় পাকিস্তান

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থবির থাকা বাণিজ্য আবারও সক্রিয় করতে প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। পাশাপাশি ঢাকা থেকে করাচি হয়ে দুবাই ফ্লাইট চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। এ ছাড়া পাটপণ্য আমদানিতে পাকিস্তান আগ্রহী বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

গতকাল বিকেলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আহমদ মারুফ এই প্রস্তাব দেন। 

বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান হয়ে দুবাই ফ্লাইট চালানোর প্রস্তাব জানিয়েছে তারা। তবে ব্যাবসায়িকভাবে সফল হলে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে।

বাংলাদেশ থেকে বৈচিত্র্যময় নানা পাটপণ্য আমদানিতে পাকিস্তান আগ্রহ প্রকাশ করেছে জানিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা বলছে, আমাদের দেশের পাটপণ্য এত ভালো, সেটা তাদের জানা ছিল না। তারা মেলায় অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘যৌথভাবে কিছু প্রকল্প নেওয়ার ব্যাপারেও কথা হয়েছে। পাকিস্তান এবং আমরা কেউই তাড়াতাড়ি কোনো কিছু করতে চাচ্ছি না। প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে। এত দিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নানা কারণে এক ধরনের স্থবিরতা ছিল। সেটা কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে আমাদের। জিটুজি ভিত্তি ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।’

পাকিস্তানের হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য এগিয়ে নেওয়ার জন্য ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। সামনের দিনে দুই দেশের মধ্যে নানা বিষয়ে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ, তাই বন্যা-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত পাকিস্তান।

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়