বাংলাদেশের রাজনীতিতে বইছে মুক্ত বাতাস
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বইছে মুক্ত বাতাস
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর এ সরকারের এক মাস পূর্ণ হলো। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন পর দেশের রাজনীতির পরিবেশে বইতে শুরু করেছে মুক্ত বাতাস।
এক মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম প্রসঙ্গে বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের মতামত দিয়ে বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দেশের সাধারণ মানুষ ফিরে পায় মুক্ত পরিবেশ; রাজনৈতিক দলগুলোও মুক্ত পরিবেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। এ অবস্থায় ড. ইউনূস শপথ নেওয়ার পর তার মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় সরকারকে সচল করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করা। এই এক মাসে ইউনূস সরকারের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারের এক মাসের কার্যক্রমের মূল্যায়ন করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ কার্যকর সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্র সংস্কার ও পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে রোডম্যাপ প্রস্তুত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা আলাপ-আলোচনা করেছে।
গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর জানা গেছে, সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা দেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ফ্যাসিবাদী দল ও জোটকে প্রকাশ্যে কর্মসূচি (পাবলিক প্রোগ্রাম) পালনের ক্ষেত্রেও সরকার নিরুৎসাহিত করবে।
যদিও ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের প্রকাশ্য কর্মসূচি দেখা যায়নি। গ্রেপ্তার ও বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া বাকিরা দেশের মধ্যে আত্মগোপনে আছেন। মাঝে মাঝেই ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হতে দেখা যায়।
অন্যদিকে গত সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনা সরকারের নির্যাতনের শিকার রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো সভা-সমাবেশসহ মুক্ত পরিবেশে রাজনীতি করছে। এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ সমমনা ডান, বামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন রয়েছে। এসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রসংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরিতে আলোচনা করেছেন ড. ইউনূস।
শর্ত পূরণের পরও যেসব দল দীর্র্ঘদিন নিবন্ধন পায়নি, তাদের মধ্যে এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন পেয়েছে।
দীর্র্ঘদিন কারাগারে থাকা নেতাকর্মীসহ শেখ হাসিনা সরকারের রোষানলের শিকার অনেক মানুষও মুক্ত হয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা অন্তত ৩টি মানহানি মামলায় খালাস পেয়েছেন। এখানো তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা আছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা সরকারের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া জামায়াতও আইনি প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। রাজনৈতিক দল ছাড়াও জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে বাকস্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. ইউনূস।
- রাজনীতিতে প্রবেশ নিয়ে যে মন্তব্য করলেন সারজিস আলম
- সচিবালয় ঘেরাওকারীরা আনসার লীগের সদস্য : সারজিস আলম
- আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান আটক
- ২ দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে আ স ম ফিরোজ
- বিশৃঙ্খলা করলেই কঠোর ব্যবস্থা
- আওয়ামী লীগ পন্থি শীর্ষ আমলারা এবার দুদকের নজরে
- দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে রোডম্যাপ দিতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
- হাসিনা দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন : ড. ইউনূস
- আওয়ামী লীগ নীতিগত অবস্থান থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি : উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
- আওয়ামী লীগ সরকারের শতাধিক প্রভাবশালীর ব্যাংক হিসাব জব্দ : বিএফআইইউ