ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপ আগামী সপ্তাহে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে অর্থনৈতিক সংলাপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশের অর্থনীতিতে সহায়তার হাত বাড়াতে চায় ওয়াশিংটন। ব্রিটেনের সংবাদ মাধ্যম ফিন্যানশিয়াল টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এটিই প্রথমবারের মতো উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক সংলাপ হতে যাচ্ছে।আগামী ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এই সংলাপ হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সংলাপে অংশ নেবেন।

মার্কিন প্রতিনিধিদলে থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য দপ্তর ও ইউএসএইডের কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দুর্বলতা মোকাবেলা করতে পারবে।

অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির ভিত্তি তৈরি করতে পারবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী। ওয়াশিংটন আইএমএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততার জন্য মার্কিন সমর্থনের ওপর জোর দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলেও জানান তিনি। কারণ বাংলাদেশ আর্থিক খাতের সংস্কার বাড়িয়ে, আর্থিক স্থিতিশীলতা উন্নত করে এবং দুর্নীতি কমিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চায়।

আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপটি রাজস্ব ও মুদ্রানীতির পাশাপাশি আর্থিক ব্যবস্থার কার্যক্রম বিস্তৃত করবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত যুক্তরাষ্ট্রের

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে দেশটির সম্পৃক্ততার জল্পনাকল্পনা দৃঢ়তার সঙ্গে নাকচ করে দিয়েছে।

গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ওয়াশিংটনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার এ সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ও আগ্রহী।’ তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

তবে তিনি দেশটিতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে বিদেশি প্রভাব সম্পর্কিত দাবির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। ছাত্র বিক্ষোভে চীনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্যাটেল জবাব দেন, ‘আমি শুধু শুধু অনুমান করতে যাচ্ছি না।’

এ সময় একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক মৈত্রী তুলে ধরে কিছু ভারতীয় মিডিয়া আউটলেট সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনেছে বলে উল্লেখ করেন। জবাবে প্যাটেল দৃঢ়ভাবে এই দাবিগুলো নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমি সেই প্রতিবেদনগুলো দেখিনি। কিন্তু আমি যা দ্ব্যর্থহীনভাবেই বলতে পারি, তা হলো, সেগুলো (প্রতিবেদনগুলো) সত্য নয় আর সম্ভবত সে কারণেই আমি সেগুলো দেখিনি।’

ইউনূসকে সমর্থন জানালেন মার্কিন সিনেটের মেজরিটি হুইপ

এদিকে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটের মেজরিটি হুইপ ডিক ডারবিন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হুইপ সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন সিনেটে ফ্লোর নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে কয়েক দশক ধরে হয়রানির শিকার হওয়া ড. ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানান।

ডারবিন তাঁর মন্তব্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দেওয়া ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির বিকাশে ড. ইউনূসের জীবনব্যাপী কাজ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের লক্ষ্যে তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে তাঁর মন্তব্য শুরু করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আজ তাঁকে (ড. ইউনূস) আমার পূর্ণ সমর্থন দিতে যাচ্ছি। আমি তাঁকে বিশ্বাস করি। আমি ২০ বছর আগেও করেছি এবং আজও করছি। আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকেও তাঁকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি ড. ইউনূসকে চিনি। তিনি তাঁর হৃদয়ে বাংলাদেশি জনগণের জন্য সর্বোত্তম কল্যাণ লালন করেন এবং এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।’

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়