ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৪ ১৪৩১

কালো টাকা আর সাদা করা যাবে না, প্রজ্ঞাপন জারি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪০, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

কালো টাকা আর সাদা করা যাবে না, প্রজ্ঞাপন জারি

কালো টাকা আর সাদা করা যাবে না, প্রজ্ঞাপন জারি

কালো টাকার মালিকদের জন্য দুঃসংবাদ দিল কর বিভাগ। কম কর দিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি, আর্থিক প্রতারণাসহ নানা অবৈধ উপায়ে অর্জিত আয় আর বৈধ করা যাবে না। গতকাল সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কালো টাকা সাদা করার প্রশ্নবিদ্ধ সুযোগ বাতিল করেছে। সংস্থাটির জারি করা প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানা গেছে।

তবে কালো টাকা সাদা করার বিধানটি সম্কূর্ণ বাতিল হচ্ছে না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সিকিউরিটিজ, নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, আর্থিক স্কিম ও ইনস্ট্রুুমেন্ট এবং সব ধরনের ডিপোজিট বা সেভিং ডিপোজিট অপ্রদর্শিত থাকলে ১৫ শতাংশ আয়কর দিয়ে বৈধ করার বিধান ছিল। সেই সঙ্গে অপ্রদর্শিত অর্থের ওপর জরিমানা ও সারচার্জ যুক্ত হবে।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, একজন নিয়মিত করদাতাকে তাঁর আয়ের ওপর সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়।

এ ছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণে সম্কদের মালিক হলে তাঁকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সারচার্জ দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ আয়কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া ন্যায়নিষ্ঠ সমতাভিত্তিক করব্যবস্থার জন্য বৈষম্যমূলক।এ অবস্থায় ১৫ শতাংশ আয়কর দিয়ে নগদ অর্থসহ পরিসম্কদ প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা হলো। এনবিআর একটি সত্যিকার বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়ানুগ ও প্রগতিশীল করব্যবস্থা গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

তবে স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্কেস ও ভূমি আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত থাকলে তা নির্ধারিত হারে আয়কর দিয়ে বৈধ করার বিধানটি বহাল থাকছে। নিয়ম অনুযায়ী স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্কেসের ক্ষেত্রে মৌজাভেদে প্রতি বর্গমিটারে ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকা আয়কর দিয়ে তা বৈধ করা যাবে। এ ছাড়া ভূমির ক্ষেত্রে মৌজাভেদে প্রতি বর্গমিটারে ৩০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয়কর দিলে তা বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

বলা হয়েছে, আয়কর আইন ২০২৩ বা অন্য কোনো আইনে যা কিছু থাকুক না কেন, আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্য কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যক্তিকে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না, যদি সেই ব্যক্তি ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করেন।তবে কর ফাঁকির কার্যধারা চলমান থাকলে কিংবা যেকোনো আইনের অধীন ফৌজদারি মামলার কার্যধারা চলমান থাকলে এই নিয়মে কর পরিশোধ করা যাবে না।

সর্বশেষ ২০২৩-২৪, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেউ কালো টাকা সাদা করেননি। তবে এর আগের বছর ২০২১-২২ অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করেন দুই হাজার ৩১১ জন। অর্থের পরিমাণে তা এক হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত নগদ অর্থ ও ব্যাংক আমানত প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বর্গমিটারপ্রতি নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে প্লট-ফ্ল্যাট প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তখন ১১ হাজার ৮৫৯ জন করদাতা কালো টাকা সাদা করেন। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন ২৮৬ জন, জমিতে এক হাজার ৬৪৫ জন, ফ্ল্যাটে দুই হাজার ৮৭৩ জন এবং নগদ অর্থ প্রদর্শন করেছেন সাত হাজার ৫৫ জন।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়